• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

বাংলাদেশের মাতারবাড়ি হবে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০৯ নভেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

বাংলাদেশের মাতারবাড়ি হবে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর এবং মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত বলে মন্তব্য করেছন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

 বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) কক্সবাজারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই কিন্তু এই মাতারবাড়ীকে বাংলাদেশের সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছেন। এখন পুরো  দুনিয়া জেনে গেছে  যে, বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে মাতারবাড়ী। সেই মাতারবাড়ী চ্যানেল হয়ে গেছে, সেটি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি প্রথম টার্মিনালের ভিত্তি স্থাপন করবেন। মাতারবাড়ী এখন দৃশ্যমান। আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ, তিনি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাংলাদেশকে গভীর সমুদ্রবন্দর উপহার দিয়েছেন। এ বন্দর দেশের অর্থনীতিকে শুধু শক্তিশালী করবে না, মাতারবাড়ী প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বৈরিতা নয় একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার সিম্বল হয়ে যাবে। এর সুবিধা আশপাশের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো নিতে পারবে। সিঙ্গাপুর-কলম্বো থেকে যে লাইটারিং করা হচ্ছে তা কমে যাবে। খরচ কমে যাবে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরে চাঞ্চল্য বাড়বে।

মন্ত্রী আরো বলেন, এ বন্দরকে ঘিরে সাংবাদিকরাই বলেছিলেন- এটি হতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর। সেটির ভিত্তি স্থাপন হতে যাচ্ছে শনিবার।

মাতারবাড়ী পোর্ট ও রোড দুটো সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো বাধা নেই। টার্মিনাল ও রোড একই সময়ে দৃশ্যমান দেখবেন। কক্সবাজারে রেল যাবে কেউ ভাবেনি। এটা প্রধানমন্ত্রী ভেবেছেন। মাতারবাড়ীতেও রেললাইন যুক্ত হবে। মাল্টি মডার্ন কানেকটিভিটি করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বাস্তবে দেখিয়ে দিয়েছেন।

 

অর্থায়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী  বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী। কোভিড, ইউক্রেন যুদ্ধ কোনো কিছুই আমাদের পরাস্ত করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো রাষ্ট্রনায়ক যে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন সে দেশের মানুষ, সে দেশ কখনো সংকটে পড়বে না।

 

আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনালের ভিত্তি স্থাপন করবেন। বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে মাতারবাড়ীতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

 

এসময় অন্যান্যের  মধ্যে প্রকল্প পরিচালক মোঃ জাহিদ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক সহ বন্দরের উদ্বোধন কর্মকর্তারা  উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়িতে শুরু হয়েছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মাতারবাড়ি টার্মিনাল বাস্তবায়িত হলে ১৬ মিটার বা ততোধিক গভীরতা সম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমন করতে সক্ষম হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করবে। এখানে বড় ধরনের ফিডার ভেসেল আসবে। অর্থ ও সময় বাঁচবে। অর্থনীতিতে সুপ্রভাব ফেলবে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পার্শ্বে ২ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পার্শ্বে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ) নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি ও ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ এবং কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দর সুবিধাদি নির্মাণের কাজ চলমান। ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ০.৬ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউস (বিশ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২.২ হতে ২.৬ মিলিয়ন টিইইউস কন্টেইনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ অংশে ২৭.৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে মাতারবাড়ি বন্দরের সাথে ন্যাশনাল হাইওয়ের সংযোগ স্থাপন করার কাজ চলমান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads